অবহেলায় বিলিন হয়ে যাচ্ছে, খানসামা উপজেলার জমিদার বাড়ি। দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার আলোকঝাড়ি ইউনিয়নের অধীনস্থ একটি গ্রাম জয়গঞ্জ। আর এই জয়গঞ্জ গ্রামেই অবস্থিত ঐতিহাসিক এই জমিদার বাড়ি।
এই জমিদার বাড়িটি তিনটি নামে পরিচিত। “খানসামা জমিদার বাড়ি”, “খানসামার জয়সঙ্করের জমিদার বাড়ি” ও “জয়গঞ্জ জমিদার বাড়ি” নামে পরিচিত। তবে এই জমিদার বাড়ি কবে নাগাদ প্রতিষ্ঠিত হয় এবং কে এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা তা জানা যায়নি। তবে কথিত আছে, ভারতবর্ষে যখন জমিদারি প্রথা চালু ছিল, তখন থেকেই এই এলাকায় এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই জমিদার বাড়ির প্রতিষ্ঠাতা এবং কোনো জমিদারের ইতিহাসে নাম না থাকলেও শেষ জমিদারের রয়েছে। শেষ জমিদারের নাম জয়শঙ্কর। তার নামানুসারে এই এই গ্রামের নামকরণ করা হয় জয়গঞ্জ। তার জমিদারির আমলেই এখানে গড়ে উঠে জয়গঞ্জ বাজার। যা প্রায় বিশ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। পরবর্তীতে দেশ ভাগের আগেই জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর শেষ জমিদার জয়শঙ্কর প্রায় ১০০ একর জমি এবং জমিদার বাড়িটি রেখে ভারতের শিলিগুড়িতে চলে যান। জমিদার বাড়িটিতে একতলা একটি প্রাসাদ রয়েছে এবং এর মধ্যে থাকার ঘর, বসার ঘর, মালামাল রাখার ঘর ও মন্দির রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়,জমিদার বাড়িটি বর্তমানে গরু,ছাগল এবং আবর্জনা ফেলার একটি উপযুক্ত জায়গা হিসেবে পরিণত হয়েছে।
জয়শঙ্কর জমিদার বাড়ি থেকেই শাসন করা হত , জয়গঞ্জ,আলোকঝাড়ী,ধর্মপুর,সহজপু র,চুন্ডীপুর,শুশুলিসহ আশপাশের এলাকা।
জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকেই ভবন গুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। আনুমানিক ৮০ থেকে ১০০ বছর আগে বিলুপ্ত হওয়া এই জমিদার বাড়ির দুটি দালানের মধ্যে একটি ভেঙ্গে গেছে, অক্ষত অপর দালানটিও নষ্টের পথে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর কাছে জানা যায়,জয়শঙ্কর জমিদার বাড়ির চারপাশে সরকারিভাবে গড়ে উঠেছে আদর্শগ্রাম। জমিদার বাড়ির তিনটি পুকুর থাকলেও সেগুলো আদর্শগ্রামের লোকরাই ব্যবহার করে থাকে। জমি,পুকুর ব্যবহার করলেও জমিদার বাড়িটির দিকে তেমন কারো নজর নেই।
পুরনো সেই জমিদার বাড়ির যত্ন নেওয়ার জন্য আহবান জানায় এলাকাবাসী।ইতিহাসের এসব প্রাচীন সাক্ষী আগামী প্রজম্মের কাছে তুলে ধরে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের।