কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের অন্যতম সদস্য মোহাম্মাদ হৃদয় ও সহ-সম্পাদক ফারদিন বিন আতিকের ওপর অতর্কিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বুধবার (০২ নভেম্বর) দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের পাশে এ মানববন্ধন করা হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা হৃদয় ও আতিকের ওপর হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে তারা। এ ঘটনায় মোহাম্মাদ হৃদয় বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।
আহত মোহাম্মাদ হৃদয় (২৪) কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রিফায়েতপুর গ্রামের ওলিউল্লাহর ছেলে। সে কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারাতলা এলাকায় বসবাস করেন। এবং ফারদিন বিন আতিক (২৩), একই উপজেলার দৌলতপুর বাজার এলাকার আতিকের ছেলে। সেও কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারাতলা এলাকায় বসবাস করেন। মোহাম্মাদ হৃদয় কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের অন্যতম সদস্য ও ফারদিন বিন আতিক সহ-সম্পাদক।
মানববন্ধনে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। এ সময় তারা হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল থেকে রোগী দেখে পেয়ারাতলায় বাসায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে হাসপাতালের পিছনের (পকেট) গেটের সামনে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি মুখে মুখোশ এবং মাথায় হেলমেট পড়া অবস্থায় হৃদয় ও তার বন্ধু ফারদিনের পথরোধ করে অতর্কিত হামলা করে গুরুতর জখম করে। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত হৃদয় ও ফারদিন বলেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা তাদের কাছে থাকা ধারালো চাকু, চাপাতি, জিআর পাইপ, লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে আমাদের হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি মারধর করতে থাকে। অজ্ঞাতনামা আসামীদের হামলায় আমার মাথায় চাপাতির কোপ লেগে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়েছি এবং আমার পেটে ধারাল চাকু দিয়ে পোচ দিয়ে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। এছাড়া রাম দা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাথাড়ি কোপ দিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার সময় আমার বন্ধু ফারদিন বিন আতিক আমাকে রক্ষার চেষ্টা করলে অজ্ঞাতনামা আসামীগণ তাকেও ধারাল অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম করে। এক পর্যায়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অজ্ঞাতনামা আসামীরা মাথায় কোপ দিতে গেলে, ওই কোপ ডান হাতে কাধের নিচে লেগে গুরুত্বর রক্তাক্ত জখম হয়। আমরা দুজনে প্রাণ রক্ষার্থে শোর চিৎকার করিতে থাকিলে, অজ্ঞাতনামা আসামীরা আমাদের খুন জখম করার এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। আমাদের শোর চিৎকারে স্থানীয় লোকজন আমাদের দ্রুত কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, হৃদয় ও ফারদিনের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। মুখে মুখোশ ও মাথায় হেলমেট পরে সন্ত্রাসী কায়দায় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে। তাদের হামলার গুরুতর আহত হয়েছে হৃদয় ও ফারদিন। অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানা, সাংগঠনিক সম্পাদক লিখন আহম্মেদ, সহ-সভাপতি পারভেজ আহম্মেদ, মিরপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আশিকুর শুভ, প্রচার সম্পাদক শ্যামল রানা, সালমান হোসেন সহ দলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এবিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেন নি।