চট্রগ্রাম সংবাদদাতা: গত ২৮ জুলাই রাতে চট্রগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মকবুল রহমান জুট মিল সংলগ্ন রেল লাইনে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে র্যাব এ ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড মিজিপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— মো. সাদ্দাম হোসেন ও তার সহযোগি মো. জাহেদ। র্যাব জানিয়েছে, সীতাকুণ্ডে চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে ডাকাতি-ছিনতাইকাজে জড়িত ৮ জনের একটি গ্রুপ। তাদের মধ্যে একজন চাঁদাবাজি মামলায় পুলিশের হাতে ধরা পরে জেল হাজতে রয়েছে। তবে বাকি সদস্যরা ধরা না পড়লেও বাকিরা জড়িত থাকার বিষয়টি গ্রেপ্তার হওয়া ওই আসামির কাছ থেকে জেনে যাওয়ার ‘ভয়’ কাজ করছিল তাদের। তাই ক্ষিপ্ত হয়ে প্রথমে গ্রেপ্তার হওয়া ওই গ্রুপের সদস্যের স্ত্রীর বাসা লুটপাট করে। পরে তাদের লুটপাটের বিষয়টি স্থানীয়দের জানাতে এবং লুটপাট হওয়া মালামাল আনতে যাওয়ার পথে ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করে তারা।
শনিবার ৩০ জুলাই বেলা সাড়ে ৩টায় নগরের বহদ্দারহাটস্থ চান্দগাঁও র্যাব-৭ এর ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এম এ ইউসুফ।
সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল এম এ ইউসুফ বলেন, ‘ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী ও অভিযুক্তরা একই গ্রুপের সদস্য। তারা চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে ডাকাতি-ছিনতাইসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। গত ২৪ দিন আগে চাঁদাবজি মামলায় ওই গৃহবধূর স্বামী পুলিশের কাছে ধরা পড়ে। এতে গ্রুপের বাকি সদস্যরা ‘ভয়ে’ ছিল তাদের বিরুদ্ধে তার স্বামী সবকিছু বলে দিবে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৮ জুলাই রাতে ওই গৃহবধূর বাসায় গিয়ে লুটপাট করে প্রায় দেড় কোটি সমমূল্যের বিভিন্ন মালামাল। পরে লুটপাটকাজে জড়িতদের কথা জানতে পেরে ছিনিয়ে নেওয়া মালামাল আনার জন্য ওই গৃহবধূ তার ভাগিনা ও ফুফাতে ভাইকে নিয়ে বের হয়। সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের মকবুল রহমান জুট মিল সংলগ্ন রেল লাইনে পৌঁছালে আসামিরা একটি ঝুপড়ি ঘরে ভাগিনা ও ফুফাতে ভাইকে আটকে রেখে ওই গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আসামিরা গৃহবধূকে ধর্ষণের ছবি তাদের মোবাইলে ধারণ করে এবং অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় আসামিরা তাদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল এবং নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে গৃহবধূর বড় ভাই তাকে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখ করে এবং একজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার ১৩ ঘণ্টার মধ্যে প্রধান আসামি ও তার সহযোগিকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাকিদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।’জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা ধর্ষণ ও লুটপাটের কাজে জড়িত ছিল বলে স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন র্যাবের এ কর্মকর্তা। এছাড়া আসামি সাদ্দামের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় মাদক, অস্ত্র, ডাকাতি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপকর্মের ৬টি মামলা রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সীতাকুণ্ড থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।