ফুলবাড়ী ২৯ বিজিবিতে প্রায় ২কোটি টাকার অবৈধ মাদকদ্রব্য ধ্বংস
মোঃআমজাদ আলী দিনাজপুর থেকে <>
দিনাজপুরের সাড়ে ১৬ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকায় ২৯ বিজিবি সদস্যরা সীমান্ত রক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে মাদক নির্মূলের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রদত্ত”জিরো টলারেন্স” নীতি নিশ্চিতকল্পে বিজিবি বদ্ধ পরিকর বলে বাহিনীটির সদস্যরা মনে করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় “মাদক পরিহার করুন, স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবুন”এই স্লোগানকে সামনে রেখে ০১ মে ২০২২ হতে ১৫ ডিসেম্বর ২০২২ পর্যন্ত গত আট মাসে প্রায় ২ কোটি টাকার বিপুল পরিমাণ অবৈধ মাদকদ্রব্য আটক করে বিজিবি সদস্যরা।এবং এসব মাদকদ্রব্য ১২ই ফেব্রুয়ারি(রবিবার) সকালে ১১টায় অত্র ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে ধ্বংস করা হয়। ধ্বংসকৃত মাদকদ্রব্যের মধ্যে রয়েছে,ফেন্সিডিল ১৫ হাজার ৮৮ বোতল, এম.কে ডিল১২ হাজার ৩ বোতল,ইয়াবা ট্যাবলেট ৩,৯২২ পিস, গাঁজা ৬৩কেজি,বিদেশি মদ১,২৭২ বোতল,দেশি মদ ৫৪.২৫ লিটার, বিভিন্ন প্রকার নেশা জাতীয় ইনজেকশন ২০ হাজার ১৬৪ পিস,যৌন উত্তেজক সিরাপ ৪৫ হাজার ৭৫৩ বোতল, হিরোইন ০.১৭ কেজি এবং ০.২ কেজি আফিম।
অত্র ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আলমগীর কবির পিএসসি’র সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন-প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি,বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, মাদকের বিষয়ে শক্ত নজর দিতে হবে।বিষয়টিকে আর অবহেলার জায়গায় রাখা যাবে না।আমি মনে করি,এটিকে এখন এক নম্বর সমস্যা হিসেবে মনে করতে হবে।আমাদের সমাজে এমন একটি শ্রেণী নেই-যারা মাদকের সঙ্গে জড়িত নয়!
মাদক নিরাময় কেন্দ্র বা নির্মূল কমিটি এগুলোতে আমি একমত নই।
তিনি জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্যে বলেন,ওয়ার্ডে- ওয়ার্ডে মাদক সেবীদের একটি তালিকা তৈরি করে ফেলেন।এই মাদক সোবলের কারণে যুবসমাজের মধ্যে বোধশক্তি কমে যাচ্ছে।
মাদক নির্মূলের জন্য
জাতি হিসেবে সবাই মিলে চাইতে হবে।
মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবীদের সামাজিকভাবে বয়কট করতে হবে।সেক্ষেত্রে আমাদের ইচ্ছা শক্তি আরো প্রবল হতে হবে।
সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,বছর-বছর আমাদের যেন আর
এধরনের মাদকদ্রব্য ধ্বংস অনুষ্ঠান আর করতে না হয়।যদি মাদক সেবী ও মাদক ব্যবসায়ী সমাজে না থাকে তাহলে তো আর এজাতীয় অনুষ্ঠান করার প্রয়োজন হবে না।
মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের এই নিরন্তর অভিযাত্রা অব্যাহত থাকুক।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- রংপুর রিজিয়ন সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত রিজিয়ন কমান্ডার
কর্নেল মোঃ আনোয়ার লতিফ খান বিপিএম (বার) পিএসসি, দিনাজপুর সেক্টর কমান্ডার…. দিনাজপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট
মনিরুল ইসলাম , দিনাজপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক,কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ দিনাজপুরের উপ- কমিশনার।
উক্ত মাদকদ্রব্য ধ্বংস অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য বক্তারা বলেন, মাদক সমাজের রন্ধে রন্ধে ছেয়ে গেছে।এর কুফল সম্পর্কে তারা বিশদ ব্যাখ্যা করেন। আপনার সন্তান যদি মাদকে ডুবে যায় তাহলে আপনি শেষ।তাই পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সবাইকে ব্যাপকভাবে সচেতন হতে হবে।আইনের ফাক ফোকড় দিয়ে বেরিয়ে আসছে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদক সেবিরা। সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।আমাদের আগামী প্রজন্ম বা যুবসমাজ মাদকে ডুবে থাকলে আমাদের রাষ্ট্র শক্তিশালী হতে পারবেনা।আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও বিজিবি’র উদ্দেশ্যে বক্তারা বলেন, যারা মাদক বহন করছে তাদেরকে ধরেন। প্রত্যেকটি কালপিটকে ধরেন।তরুণ প্রজন্মকে জনশক্তিতে রূপান্তর করতে হবে।সেক্ষেত্রে মাদক একটি বড় অন্তরায়।জাতীয় উদ্বেগের কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে এই মাদক। আসুন সবাই সোচ্চার হই।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন অন্যান্য সামরিক/বেসামরিক কর্মকর্তা বৃন্দ,স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,গণমাধ্যমের প্রতিনিধিগণ ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।