ছোট বোন নাসরিন বেগম ও ৩ বছর বয়সী শিশু কন্যা হাবিবা আক্তারকে সঙ্গে নিয়ে সিজার করার উদ্দেশে সকাল ১০টার দিকে বাড়ি থেকে বের হোন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা নাসিমা বেগম। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শহরের হাবিব মেডিকেলে গিয়ে পৌঁছালে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানায় আগামী বৃহস্পতিবার ২০ অক্টোবর পুনরায় আসতে বলেছেন। সেদিন তাঁর সিজার হবে।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে হাবিব মেডিকেল থেকে বের হয়ে শহরের জিয়া সুপার মার্কেটে বাচ্চা ও নিজের জন্য পোশাক কিনতে যান নাসিমা। কেনাকাটার একপর্যায়ে জিয়া সুপার মার্কেট থেকে একজন কিশোর ও একজন যুবক তাদেরকে ডেকে নিয়ে যায় বাংলাদেশ ইসলামি ব্যাংক ভোলা জেলা শাখার দক্ষিণ পাশের একটি গলির মধ্যে। সেখানে পৌঁছার পর ওই দুইজনের সঙ্গে যুক্ত হয় আরও একজন। এরপর নাসিমার সাথে থাকা নাসরিনের হাতে পাঁচশো গ্রাম ওজনের একটি সুজির প্যাকেট দিয়ে তাদেরকে নেশা জাতীয় কোনো দ্রব্যের ঘ্রাণ দিয়ে হাতিয়ে নেন নগদ ৭ হাজার টাকা, নাসরিনের কানে থাকা ৪ আনা ওজনের দুইটি কানের দুল, গলায় থাকা ৮ আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন ও একটি স্মার্ট ফোন।
ভুক্তভোগী নাসিমা ও নাসরিন সদর উপজেলা বাপ্তা ১ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল শহীদের মেয়ে।
ঘটনার পর তাঁরা জিয়া সুপার মার্কেটের গেটের সামনে আহাজারি করতে থাকেন। পরে ভোলা সদর মডেল থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন।
পরে পুলিশ ও জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় তাঁরা ঘটনাস্থলের আশেপাশে থাকা বেশকিছু সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেন।
ঘটনার পর পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে ভোলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. ফরহাদ সরদারের কাছে নিয়ে যায়। তিনি ভুক্তভোগীদের বক্তব্য শুনেন। এরপর তাঁরা অজ্ঞাতনামা উল্লেখ করে ভোলা সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগী নাসরিন বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে জানান, মঙ্গলবার তাঁর বোন নাসিমার সিজার হওয়ার কথা ছিল। সেজন্য বাড়ি থেকে ৭ হাজার টাকা নিয়ে হাবিব মেডিকেল এসেছিলেন তাঁরা। কিন্তু একটি ছিনতাইকারী দল তাদেরকে নেশা জাতীয় কোনো দ্রব্যের ঘ্রাণ দিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা স্বর্ণালংকার ও স্মার্ট ফোন ছিনিয়ে নেন।