জুয়ার নেশা এক ধরনের মানসিক রোগ!

প্রকাশিত: ১০:০১ পূর্বাহ্ণ, মে ২০, ২০২৩

পৃথিবীর অধিকাংশ দেশে জুয়া খেলা বহু পুরনো এবং প্রচলিত একপ্রকার অবসর-বিনোদনের মাধ্যম। তবে, সাম্প্রতিক সময়ে নতুন আতঙ্কের নাম অনলাইন জুয়া। আর এতে তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ বেশি থাকলেও পিছিয়ে নেই বয়স্করাও। শুধু অনলাইন নয়,আজকাল অন্যান্য মাধ্যমেও জুয়া খেলে স্বর্বস্বান্ত হচ্ছেন অনেকে। তবে, প্রযুক্তির ক্রমবিকাশের সঙ্গে জুয়ার অন্যান্য মাধ্যমের চেয়ে অনলাইনে জুয়াতেই মানুষের অংশগ্রহণ বেশি।

এক ধরনের কৌতূহল থেকে তরুণ প্রজন্ম আকৃষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন জুয়ার সাইটে। প্রথমে অল্প টাকা বিনিয়োগে করে লোভে পড়ে একপর্যায়ে খোয়াচ্ছে লাখ লাখ টাকা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, বিদেশ থেকে পরিচালিত এসব সাইট বাংলাদেশেও পরিচালনা করছে তাদের এজেন্টরা। জুয়ায় বিনিয়োগ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশে।

তবে, জুয়ার মাধ্যমে যে শুধু দেশের কিংবা ব্যক্তির অর্থনৈতিক ক্ষতি হচ্ছে ব্যাপরটা তা নয়। জুয়ায় আসক্তির কারণে অনেকেই পারিবারিক অশান্তিতে ভুগছেন।

আর আশঙ্কাজনক তথ্য হলো, মানুষ শুধুমাত্র অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে জুয়ায় আসক্ত হয় না। এটি এক ধরনের মানসিক রোগও।

মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে,জুয়ার নেশা যখন জুয়াড়িদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং দৈনন্দিন জীবনে নিরানন্দের কারণ হয়ে ওঠে তখন তা গুরুতর সমস্যায় পরিণত হয়।

ভারতের নিমহান্স হাসপাতালের এক গবেষণা বলছে, জুয়াকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট ৮৭.৫% সমস্যা একজন জুয়াড়ির জীবনে ২৫ বছর বয়সের আগেই শুরু হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জুয়া খেলতে খেলতে অনেক মানুষই নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে এবং এই আচরণের জন্যই তাদের গোটা জীবনটা সমস্যায় ভরে যায়। জীবনের সব গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্ম ছেড়ে দিয়ে তারা শুধু জুয়া খেলার সুযোগ খোঁজে এবং জুয়ার মধ্যেই নিজেদের জীবনকে ডুবিয়ে রাখে। অনেকে টাকাপয়সা খুইয়ে এবং নানা বিপত্তি সত্ত্বেও জুয়া খেলা ছাড়তে পারে না। বহুবার জুয়ার নেশা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করেও অনেকে শেষ পর্যন্ত জুয়া খেলা থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারে না। এটা অনেকটা মাদকের আসক্তির মতো।