চট্টগ্রাম রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি কাস্টম হাউসের বহুমুখী কাজে এসেছে গতি

প্রকাশিত: ৮:৪৫ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২১

 

চট্টগ্রাম: দেশের সবচেয়ে বড় রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের বহুমুখী কার্যক্রমে গতি এসেছে। চট্টগ্রাম বন্দর ও শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে আমদানি পণ্যের রাজস্ব আদায়, ট্রেড ফ্যাসিলিটেশন, ডিজিটালি অটোমেশন, চোরাচালান ও শুল্কফাঁকি রোধ, নির্ধারিত সময়ে ডেলিভারি না নেওয়া পণ্যের নিলাম, ব্যবহারের উপযোগিতা হারানো কিংবা ক্ষতিকর রাসায়নিক পণ্য ধ্বংস ইত্যাদি ক্ষেত্রে দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়েছে।
মিথ্যা ঘোষণা, জাল জালিয়াতি ও শুল্কফাঁকি রোধে অসাধু সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে কাস্টম হাউস। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে ৪২টি লাইসেন্স, বাতিল করা হয়েছে ৩টি।

সূত্র জানায়, ২০২০-২১ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৪ হাজার ৩০৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। গত ১৫ জুন পর্যন্ত আদায় হয়েছে ৪৭ হাজার ৯১৯ টাকা ৭৮ লাখ টাকা। বৈশ্বিক মহামারি করোনার মধ্যেও সরকার ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ব্যবসাবান্ধব নীতির পাশাপাশি কাস্টম হাউসের কমিশনারের ডায়নামিক নেতৃত্বের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে।

তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর কাস্টম হাউসের অভ্যন্তরীণ নানা উদ্যোগ, কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে শুল্ক আদায়ের পাশাপাশি বছরের পর বছর বন্দরে পড়ে থাকা পণ্যের দ্রুত নিলাম, পচা-ব্যবহার অনুপযোগী পণ্যের নিলাম এবং বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্য সুনামগঞ্জের একটি সিমেন্ট কারখানায় পাঠিয়ে ধ্বংসের ক্ষেত্রে বড় সাফল্য এসেছে।

কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার মো. আল আমিন বাংলানিউজকে জানান, আগে মাসে একটি নিলাম অনুষ্ঠিত হতো। এখন কমিশনার স্যারের নির্দেশনায় মাসে তিনটি পর্যন্ত নিলাম হচ্ছে। এতে কনটেইনারের জট কমছে চট্টগ্রাম বন্দরের ইয়ার্ড ও জেটিতে। পাশাপাশি ৬ হাজার টন পচা, গলা, ব্যবহার অনুপযোগী পণ্য ধ্বংস করে ২০ ফুট হিসেবে ২৬৮ কনটেইনার খালি করা হয়েছে। একই সঙ্গে ৪৮ টন বিপজ্জনক রাসায়নিক পণ্য সিলেটে নিয়ে নিরাপদে ধ্বংস করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে কনটেইনার জট এড়াতে কাস্টম হাউস আমদানি পণ্য দ্রুত ছাড়করণে ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করছে। গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, দ্য কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯ এর সেকশন ৮২ এর সাব সেকশন (১) অনুযায়ী সমুদ্রবন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা পণ্যচালান অবতরণের পর ৩০ দিনের মধ্যে এবং বিমানবন্দরে অবতরণের ২১ দিনের মধ্যে অথবা কাস্টমসের অনুমোদিত অতিরিক্ত সময়ের মধ্যে শুল্ক-কর পরিশোধ করে খালাস নিতে হবে। অন্যথায় উক্ত পণ্য নিলাম বা আইনানুগ উপায়ে নিষ্পত্তি করা হবে।

এ অবস্থায় উল্লিখিত আইন লঙ্ঘনের অপরাধে জরিমানা ও পোর্ট চার্জ পরিহারের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের অধিক্ষেত্রাধীন বন্দর, অফডক ও বিমানবন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা ও অখালাসকৃত সব পণ্যচালান দ্রুত খালাস নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন কাস্টম হাউসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ একটি ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বৈধ আমদানি ও সৎ করদাতাদের সার্বিক সহযোগিতা দিতে বদ্ধ পরিকর। বিদ্যমান আইন ও বিধি মোতাবেক যথাযথ পরিমাণ রাজস্ব আদায় ও দ্রুত পণ্যচালান খালাসে সবার সহযোগিতা চাই আমরা।